নিরপেক্ষতায় এগিয়ে আমরা...

মঙ্গলবার, মে ১৩, ২০২৫

‘কোনো ভাষাকে হারানো যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর ২২ ফেব্রুয়ারী,২০২১

ভাষার অধিকার রক্ষা করা, ভাষাকে সম্মান দেওয়া এবং হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলোকে সংরক্ষণ করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এই ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার কাজ শুরু করি। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এর কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে আবারও ক্ষমতায় এসে শুরু করি। এর কাজ আমরা অব্যাহত রেখেছি। আমাদের লক্ষ্য হলো সারা বিশ্বের হারিয়ে যাওয়া এবং চলমান ভাষাগুলোর নমুনা এখানে সংরক্ষণ করা। গবেষণা করা, ভাষার ইতিহাস সংরক্ষণ করা। এ জন্য ভাষা জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে। কোনো ভাষা যাতে হারিয়ে না যায়, তার জন্য এই ব্যবস্থাটা আমরা নিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘মাতৃভাষা মানুষের আত্মপরিচয় ও অস্তিত্বের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। ভাষা ও সংস্কৃতির দ্বারা মানব ইতিহাসের বৈচিত্র্যময় জীবনধারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রবহমান থাকে। পৃথিবীর ভাষাবৈচিত্র্য সংরক্ষণ, চর্চা ও বিকাশ এবং বহুভাষিক সংস্কৃতিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করাই ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদযাপনের প্রকৃত তাৎপর্য। আমরা চাই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এই চেতনা সবার মধ্যে সঞ্চারিত হোক। দূরীভূত হোক সকল বিভেদ। সবার মধ্যে জেগে উঠুক স্বদেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধ। বিশ্বের সকল মাতৃভাষা স্বমহিমায় বিরাজিত থাকুক ও বিকশিত হোক।’’

সরকার প্রধান আরো বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি যখন আমরা আমাদের ভাষা দিবস হিসেবে ব্যবহার করছি, শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে যাচ্ছি এবং ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমরা সেই সাথে সাথে সারাবিশ্বের সকল ভাষাপ্রেমীর প্রতিও শ্রদ্ধা জানাই।”

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, “ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অংশগ্রহণের বিষয়টি অনেক জ্ঞানী-গুণী বুদ্ধিজীবী মানতে রাজি হতেন না। তারা বলার চেষ্টা করেছেন—‘সে তো জেলে ছিল, সে আবার ভাষা আন্দোলন করবে কীভাবে?’ কিন্তু আমার প্রশ্ন—জেলে তিনি গিয়েছিলেন কেন? তাকে জেলে যেতে হয়েছিল ভাষা আন্দোলন শুরু করার কারণেই। সে কারণে তিনি বারবার গ্রেপ্তার হন। দীর্ঘ কারাবাস তাকে করতে হয়।”

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক দেওয়া হয়। জাতীয় পর্যায়ে মাতৃভাষা পদক পেয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক ভাষাবিজ্ঞানী ও নজরুল গবেষক রফিকুল ইসলাম এবং বেসরকারি সংগঠন খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক পান উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ। এ ছাড়া নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা নিয়ে কাজ করা বলিভিয়ার অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগ অ্যাকটিভিজমো লেংকুয়াসকে বাংলাদেশ সরকারের সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি পদক তুলে দেন।

tags

মন্তব্য

মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন

সব খবর