শখের ছাদ কৃষিতে পৌর কর ছাড়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাদ কৃষি। স্থানীয় লোকজন বাড়ির আঙ্গিনার পাশাপাশি এখন ছাদে পেয়ারা, লেবু মাল্টা, কদু, বেগুন,মরিচ, পেপেসহ নানা জাতের ফল ও ফুল আবাদ করছেন। নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে দিন দিন বাড়ছে ছাদ কৃষির আবাদ।
এদিকে আখাউড়া পৌরসভা মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বাড়ির আঙ্গিনায় ও ছাদ কৃষিতে আগ্রহ বাড়াতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করেন। নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পৌর এলাকায় যারা বাড়ির আঙ্গিনায় ও ছাদে কৃষি করবে তাদেরকে পৌর কর ছাড় দেওয়া ঘোষনা দেন তিনি। রোববার পৌর শহরের রাধানগর এলাকায় দ্বিপক ঘোষের ছাদ বাগন পরিদর্শন শেষে তিনি এ ছাড়ের ঘোষনা দেন।
মেয়র কাজল বলেন, নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে প্রতিটি নাগরিকের বাড়ির আঙ্গিনায় বা ছাদে কৃষি করা উচিত। এক সময় বাড়ির আঙ্গিনায় ফুলে ফলে ভরপুর ছিল। পরে নানা কারনে আর দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এখন বাড়ির আঙ্গিনায়, ছাদসহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষ আগ্রহ হয়ে নানা রকম ফল ফুল আবাদ করছেন।
তিনি আরো বলেন, পৌর এলাকায় যাদের বাড়ির ছাদ বা আঙ্গিনায় পরিপাটি বাগান রয়েছে তাদেরকে পৌর কর ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায়। পাশাপাশি যাদের দোকান পাট পরিস্কার রয়েছে তাদেরকে ও ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, মসজিদ পাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাড়ির ছাদে অনেক পরিবার বছর জুড়ে পেয়ারা, লেবু মাল্টা, কদু, বেগুন,মরিচ,পেপেসহ নানা জাতের ফল ও ফুল আবাদ করছেন এসব আবাদ করছেন।
তারা জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সহযোগিতায় ও ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এসব আবাদ করছেন। তবে ছাদ কৃষি আবাদে প্রথমে কিছুটা হতাশা কাজ করলে ও ফলন আশানুরোপ ভাল হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে আবাদ। সেই সাথে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তারা বাড়তি আয় করছে বলে জানায়।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন বাড়ির ছাদে এ বাগান শুধু শখের বিষয় নয়, পরিবেশ সুরক্ষায় বড় ভূমিকা পালন করছে। ছাদ কৃষিতে বাগানের মাধ্যমে গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়ার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। পরিবেশ দুষণমুক্ত থাকে। বায়োডাইভারসিটি সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়া তাজা শাকসবজি ও ফল মুলের চাহিদা ও মেটে। এসব কারনে বাড়ির ছাদে বাগান বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পরিকল্পিতভাবে বাড়ির ছাদে বাগান করা হলে এটি প্রতিটি পরিবারের সবজি ও ফলমূলের চাহিদা মিটিয়ে ও পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখছে বলে জানায়।
পৌর শহরের তারাগন এলাকার মো. মামুন মিয়া বলেন কৃষি বিভাগের প্রণোদনায় গত ১ বছর আগে মাল্টা,পেপে, লেবু, মরিচসহ বেশ কয়েকটি ফল ও ফুলে চারা বাড়ির ছাদে ড্রামের লাগিয়েছে বলে জানায়। শুরুতে সংশয়ে পড়লে ও তবে ফলন হওয়ায় সংশয় কেটে যায়।
মসজিদ পাড়ার মো. খাজু ভূইয়া বলেন, ইচ্ছা থাকা সত্বেও বাড়িতে জায়গা কম থাকায় ফল ফলাদি ও সবজির আবাদ করা যায়নি। তাই ফল ফলাদি ও সবজির আবাদ করতে ছাদকে বেছে নিয়েছি। ছাদ কৃষিতে রয়েছে বরবটি, লেবু বেগুন, মরিচ, পেপেসহ নানা জাতের ফল ও ফুল গাছ। বাগানে উৎপাদিত বিষমুক্ত এসব ফল ও সবজি নিজেদের চাহিদা মিটাছে। সে সাথে পরিবেশকে যেমন সুন্দর রাখছে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, এ উপজেলায় ছাদ কৃষি নতুন আবাদ শুরু হয়েছে । জমির পাশাপাশি লোকজন ছাদে ফল ও সবজি আবাদ শুরু করছেন।
ছাদ বাগান থেকে উৎপাদিত স্বাস্থসম্মত খাদ্য শরীরের জন্য যেমন নিরাপদ একই ভাবে তা অনুকুল পরিবেশ ও আবাসন স্থানকে দুষণমুক্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ছাদ কৃষি মানুষের মাঝে সাড়া জাগিয়ে তুলতে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।