যেন ঈদ যাত্রার ঢল
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামীকাল বুধবার থেকে আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে অনেক মানুষই রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি। রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী, সায়েদাবাদ ও আব্দুল্লাহপুরে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ছিল মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। প্রবেশমুখগুলোতে দিনভরই ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। বেশির ভাগ মানুষই পিকআপ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, সিএনজিচলিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহনে ঢাকা ছাড়ছে। কেউ কেউ কিছুটা পথ হেঁটেও যাচ্ছে। অনেককে আবার কম ভাড়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ ছিল রাজধানীজুড়েই। অনেক জায়গাই ছিল যানজট। আবার বিভিন্ন বাস স্টপেজে মানুষকে ব্যাগ নিয়েও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। করোনার এত সতর্কতার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না, এমনকি অনেককে মাস্ক পরতেও দেখা যায়নি।
এদিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে নামে গতকাল ঘরমুখী মানুষের ঢল। গেল রবিবার রাত থেকেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ বেশি থাকলেও গতকাল সকাল থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ বাড়তে থাকে ঘাটে। সেখানে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে হাজারো যানবাহন। এসব যানবাহনের মধ্যে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও ছোট গাড়ির সংখ্যাই বেশি।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও গতকাল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে পাটুরিয়া ঘাটে হাজার হাজার মানুষকে পারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাট এলাকায় ছোট গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। এ সময় লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ফেরিতে চাপ পড়ে।
গতকাল বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর গাবতলীতে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার এক পাশে প্রচণ্ড যানজট। আর গাবতলীতে ঢোকার মুখ থেকেই ব্যাগ নিয়ে মানুষের অপেক্ষা। আমিনবাজার ব্রিজের আগ পর্যন্ত গিজগিজ করছিল মানুষ। তবে ঢাকায় ঢোকার রাস্তা ছিল একেবারেই ফাঁকা। গাবতলী থেকে গতকাল দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
ঢাকা ছাড়া মানুষের অতিরিক্ত চাপের কারণে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও সিনএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো। গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, একাধিক মাইক্রোবাস বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রীদের ডাকাডাকি করছে।