নাম তার ‘মৌমাছি বাড়ি’
বাড়ির নাম ‘মৌমাছি বাড়ি’। শুনতে অবাক লাগলেও রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের ক্যানাডাবাজার রাজেন্দ্রপুর গ্রামে একটি বাড়ির এমনই নামকরণ করেছেন স্থানীয়রা। গত পাঁচ বছর ধরে এ দোতালা বাড়িতেই বসবাস করছে লাখ লাখ মৌমাছি। আর সেখান থেকেই এ অদ্ভুত নামকরণ।
বাড়িটির সিলিং, কার্নিশ, বারান্দা, দেয়াল, ভবনের পাশ এবং আশাপাশের গাছের ডাল যেখানেই চোখ যায় সেখানেই মৌমাছির চাক। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০টি মৌচাক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাড়ির বাসিন্দারা। তারা জানান, বছরের অন্যান্য সময় মাত্র ৭-৮টি মৌচাক থাকলেও শীতকালে প্রচুর পরিমাণ মৌমাছি এসে বাসা বাঁধে বাড়িটিতে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চাকের সংখ্যাও বেশি।
বাড়ির মালিক মো. সেকেন্দার মুন্সী মূলত একজন প্রবাসী। দীর্ঘ ১৭ বছর বিদেশে কাটানোর পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে এ বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু গত ৫ বছর ধরে তাদের সঙ্গে বসবাস করছে অসংখ্য মৌমাছি। এদের জন্য বাড়ির দোতালায় কেউ বসবাস করতে পারে না। কিন্তু তারপরও ভালো লাগা থেকে বাড়ির মালিক এ ক্ষুদে প্রাণীগুলোকে বেরও করে দেন না। এমনকি কোনো ক্ষতিও করেন না।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর এ মৌচাকগুলো থেকে লক্ষাধিক টাকার মধু বিক্রি করেন মো. সেকান্দার মুন্সী। তারপর সেই টাকা দান করে দেন তিম খানা, মাদ্রাসা ,দরিদ্র মানুষের মাঝে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকে বাড়িটি দেখার জন্যও আসেন।
রাজবাড়ী সরকারি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মো. নুরুজ্জামান জানান, মৌমাছি নিরাপদ জায়গা ও পর্যাপ্ত খাবার যেখানে পাওয়া যায় সেখানে বাসা বাধে। মো. সেকান্দারের বাড়িটিতে লোকজন কম থাকায় মৌমাছিরা সেখানে নিরাপদেই বসবাস করছে। এছাড়া ওই গ্রামে প্রচুর সরিষার আবাদ হয়। তাই শীতকালে মৌমাছির আগমন বেশি ঘটে।