নিরপেক্ষতায় এগিয়ে আমরা...

বুধবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৫

তারাবির নামাজে সতর্কতা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর ২৫ এপ্রিল,২০২১

তারাবি রমজানের অন্যতম ইবাদত। তারাবির নামাজের অসংখ্য ফজিলত আছে। যেমন—হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানে তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ফরজ নামাজ ছাড়া রমজানের তারাবি নামাজ আদায় করার জন্যও উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন যে যখন রমজান আগমন করে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। (নাসায়ি, হাদিস : ২১০৪)

তারাবি নামাজ মূলত আরামের নামাজ। তারাবি ‘তারবিহাতুন’-এর বহুবচন। তারবিহাতুন শব্দের অর্থই হলো আরাম করা, বিশ্রাম করা। এই নামাজের একটি বিশেষ নিয়ম হলো, এই নামাজে চার রাকাত পর পর চার রাকাত পরিমাণ বসে আরাম করার বিধান রয়েছে।

কিন্তু আমাদের সমাজে যেসব মসজিদে খতম তারাবি হয়, সেসব মসজিদে কে কত দ্রুত পড়তে পারে, তা-ই বড় হয়ে দাঁড়ায়। যে হাফেজ সাহেব যত দ্রুত তারাবি শেষ করতে পারেন, তাঁকে তত ভালো হাফেজ মনে করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোরআন পাঠের সাধারণ নিয়মাবলি ও আদবের প্রতিও লক্ষ করা হয় না। তা ছাড়া মুসল্লিরা এভাবে নামাজ পড়ে অভ্যস্ত হওয়ার কারণে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে দ্রুত নামাজ শেষ করার নির্দেশও থাকে। হাফেজ সাহেবরা সেই নির্দেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাড়াহুড়া করে নামাজ শেষ করার চেষ্টা করে থাকেন। ফলে কোরআন শ্রবণের মাধ্যমে মুসল্লিদের অন্তরে যে স্বাদ অনুভব করার কথা, যে আবেগময়তা সৃষ্টি হওয়ার কথা, সেটা হয় না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার বিকল্প নেই।

সাধারণত অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি প্রশ্ন করে থাকেন, কতটুকু দ্রুত পড়লে তারাবি মাকরুহর পর্যায়ে পড়বে না? ইসলামী আইনবিদদের মতে, যে গতিতে পড়লে পবিত্র কোরআনের শব্দাবলি বোঝা যায়, ন্যূনতম সেই গতিতে পবিত্র কোরআন পড়তে হবে। তবে যে গতিতে পড়লে কিছুই বোঝা যায় না, সে গতিতে পড়া বৈধ নয়, এর দ্বারা সওয়াবও হবে না। (ফাতাওয়ায়ে শামী : ২/৪৭, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/১১৭)

তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত তারাবির নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে তার যথাযথ হক আদায়ের চেষ্টা করা। মহান আল্লাহ সবার তারাবি কবুল করুন। আমিন।

tags

মন্তব্য

মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন

সব খবর