ভেটোর কারণে ঝুলে আছে রোহিঙ্গা সঙ্কট
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্যের কারণেই জাতিসংঘে ঝুলে আছে রোহিঙ্গা সঙ্কট।
রোববার (২৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় এ অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
রোহিঙ্গা নিপীড়ন বিরোধী প্রস্তাব এলেই ২০১৭ সালের পর থেকে বরাবরই ভেটো দিচ্ছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্য।
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘ যা যা করার করছে। তবে, জাতিসংঘের শক্তিটা হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচজন স্থায়ী সদস্য, তারা হলো ‘মাতব্বর’।
‘এরা একজন যদি আপত্তি করে সেখানে জাতিসংঘ কিছুই করতে পারে না। তার ফলে আমাদের রোহিঙ্গা সমস্যা, ফিলিস্তিনের সমস্যা ঝুলেই আছে।’
আর সে কারণেই সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ ফেলতে, শক্ত অবস্থানে যেতে পারছে না জাতিসংঘ।
বন্ধু দেশ হওয়ার পরও, এ ইস্যুতে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সহযোগিতা না পাওয়ায় হতাশ ঢাকা। জাতিসংঘ দিবসকে সামনে রেখে, এক আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, সবার কল্যাণে জাতিসংঘ কাজ করবে, এমন প্রত্যাশা থাকলেও নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্যের জন্য তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।
বাংলাদেশে সৃষ্ট শরণার্থী সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার যাতে জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ করে, সেজন্য নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব তোলার উদ্যোগ চার বছর আগে নিয়েছিল যুক্তরাজ্য। তবে চীন ও রাশিয়া ওই উদ্যোগ বর্জন করে।
চীন-রাশিয়া ‘সদয়’ হবে – এই প্রত্যাশা রেখে মোমেন বলেন, ‘কারণ সেখানে এই নিরাপত্তা পরিষদ, জাতিসংঘের নিজের কোনো শক্তি নাই, তার শক্তি হচ্ছে সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া শক্তি- সে কারণে আমরা ঝুলে আছি।’
জাতিসংঘ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না মনে করলেও সংস্থাটির অবদান অস্বীকার করছেন না মন্ত্রী। সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদানের কথা সামনে এনে বলছেন, সে কারণেই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে নিয়ে গর্বিত। বাংলাদেশও গর্ব করে জাতিসংঘকে নিয়ে।
জাতিসংঘ মহাসচিব প্রশ্নে, সেই মাপের ব্যক্তিত্ব তৈরির তাগিদও দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় তিনি আরও জানান, ২০২৬ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি হতে প্রার্থী হবে বাংলাদেশ।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। তবে বিপুল সংখ্যক এই শরণার্থী এখন ‘বোঝা’ হিসেবে দেখছে সরকার।