পাঁচ লাল কার্ডের এক ম্যাচ
প্রায় ৯ বছর পর চিরবৈরী পিএসজির বিপক্ষে জয় অলিম্পিক মার্শেইয়ের। কিন্তু তা ছাপিয়ে ম্যাচের চুম্বকাংশ হয়ে রইল ম্যাচ শেষের হাতাহাতি, আর নেইমারসহ আরো পাঁচ লাল কার্ড।
রবিবার রাতের ম্যাচটি উত্তেজনা ছড়িয়েছে একেবারে শুরু থেকেই। ১৩ মিনিটেই রেফারি জেরোম ব্রিসার্ডকে হলুদ কার্ড দেখাতে হয়েছে দুবার। ৩১ মিনিটে ফ্লোরিয়ান থুয়াভিনের গোলের জবাব দিতে পারেনি থমাস টুখেলের তারকাহীন পিএসজি। ফলে ১-০ ব্যবধানে হেরে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয়হীন রইল দলটি।
শুরু থেকে চলতে থাকা বৈরীভাবটা চরমে গিয়ে ঠেকে ম্যাচের অন্তিম সময়ে। দুই পক্ষের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় যখন রূপ নেয় হাতাহাতিতে। লেভিন কুরজাওয়া দেখেন প্রথম লাল কার্ড। এরপর মার্শেইয়ের দুই খেলোয়াড় জর্ডান আমাভি আর দারিও বেনেদেত্তো আর পিএসজির লিয়ান্দ্রো পারেদেসকেও দেওয়া হয় মার্চিং অর্ডার।
ভিএআর দেখে এসে রেফারি নেইমারকেও দেখানো হয় লাল কার্ড। কারণ? প্রতিপক্ষ মিডফিল্ডার আলভারো গঞ্জালেজকে পেছন থেকে চড় মারা। এর আগেও অবশ্য দুজনের ভেতর কথা কাটাকাটি হয়েছে বেশ ক’বার। ম্যাচশেষে নেইমারের আফসোস, কেন তার চেহারায় ঘুষিটা মারতে পারলেন না! টুইটারে লালকার্ড পাওয়া নেইমার লিখেন, ‘আমার একমাত্র আক্ষেপটা হচ্ছে, কেন তার চেহারায় একটা ঘুষি মারতে পারলাম না!’ পরের টুইটে অবশ্য এর কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন নেইমার। জানালেন, গঞ্জালেজের বর্ণবাদী মন্তব্যের কারণেই এমনটা করেছিলেন তিনি! ব্রাজিলীয় তারকার কথা, ‘ভিএআরে আমার ‘আগ্রাসিভাব’টা ধরা পরা খুবই সহজ। এখন আমি সেই বর্ণবাদীটার চেহারাটা দেখতে চাই, যে আমাকে বানর বলেছিল। আমি এটাই দেখতে চাই।’
পিএসজির বিপক্ষে ম্যাচে পাওয়া জয়টার জন্যে মার্শেইকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় ৯ বছর। ২০১১ সালের নভেম্বরের পর থেকে আর কোনো টুর্নামেন্টেই তাদের হারাতে পারেনি মার্শেই। দলটির কোচ আন্দ্রে ভিলাস বোয়াস বড় করে দেখলেন সেটিই। বললেন, ‘কঠিন, গুরুত্বপূর্ণ, আর ঐতিহাসিক একটা জয়। পিএসজির শুরুর চাপটাকে সামলাতে কষ্ট করতে হয়েছে আমাদের, কারণ তারা তাদের কাজে যথেষ্ট দক্ষ। কিন্তু শেষমেশ একটা জয় নিয়ে বেরোতে পেরেছি আমরা। সুন্দর ছিল না অবশ্যই আর আমরা ভুগেওছি বেশ।’
এদিকে ম্যাচে বিশৃঙ্খলার কারণে রেফারিকে দুষছেন পিএসজির ক্রীড়া ব্যবস্থাপক লিওনার্দো। ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই খেলোয়াড় বলেন, ‘পুরো ম্যাচে ১৪টা কার্ড দেখাতে হয়েছে, যার পাঁচটা ছিল লাল। যার মানে খেলাটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। সে তার ওপরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল। সে লিগ কাপের ফাইনালের দায়িত্ব পালন করেছে বটে, কিন্তু এই ধরনের ম্যাচে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তার নেই।’