নিরপেক্ষতায় এগিয়ে আমরা...

শনিবার, জানুয়ারী ১৮, ২০২৫

ইব্রাহিমের হরেক রকম ফুলের চা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর ২৮ সেপ্টেম্বর,২০২০

ভাগ্যবদলের আশায় এসএসসি পরীক্ষার পর চাকরির সন্ধানে ঢাকা চলে যান ইব্রাহিম নদী (২১)। গার্মেন্টে একটা চাকরিও জুটিয়ে ছিলেন। বেঁচে থাকার একটা অবলম্বন পেয়েছিলেন তিনি।  কিন্তু মহামারী করোনা শেষ করে দিয়েছে কৃষক পরিবারের সন্তান ইব্রাহিমের সেই স্বপ্ন। এখন তিনি কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের পাশে একটি দোকানে হরেকরকম ফুল দিয়ে চা তৈরি করেন। চা বিক্রির এই আয় দিয়েই চলছে তার সংসার।

কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কৃষক আমিরুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম নদী। তিন ভাইবোনের মধ্যে ইব্রাহিম বড়। ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর সংসারের সচ্ছলতার জন্য চলে যান ঢাকায়।

পরে নারায়ণগঞ্জে এসোটেক্স নিট গার্মেন্ট কারখানায় হেলপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সর্বশেষ সেখানে তিনি ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করতেন। বেতন যা পেতেন তা দিয়ে ভালোই চলছিল ইব্রাহিমের সংসার। কিন্তু করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় তার গার্মেন্ট। স্বপ্নে ভাটা পড়ে ইব্রাহিমের।

ইব্রাহিম নদী বলেন, এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর আর্থিক দূরাবস্থার কারণে জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় চলে যাই। তিন বছর নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টে চাকরি করতাম। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হই। এরপর প্রায় দুই মাস বেকার বসেছিলাম। এ সময় কারও কাছ থেকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনি।

তিনি আরও বলেন, কিছু না পেয়ে পরে স্বল্পপুঁজিতে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেই। তেমন সামর্থ্য না থাকায় স্থানীয় মিরপুর জিয়াসড়কের পাশে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে চায়ের দোকান দিয়েছি। এখানে সারাদিন চা বিক্রি করে তিন থেকে চারশ' টাকা আয় হয়। এ দিয়ে কোনোমতে সংসার চলছে।

ইব্রাহিম জানান, আমার দোকানে বিভিন্ন ফুল দিয়ে চা তৈরি করা হয়। এসব ফুলের মধ্য রয়েছে অপরাজিতা, জবা প্রভৃতি। এছাড়াও মরিচ ও তেঁতুল দিয়ে তৈরি চায়েরও জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

তিনি আরও জানান, আমার বাবা একজন কৃষক। তার নিজের কোনো জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে টুকটাক চাষাবাদ করেন। এ দিয়ে কোনো মতে সংসার খরচ চললেও ছোট ভাইবোনদের পড়ালেখার খরচ চলে না। তাই সংসাদের খরচ জোগাতে অবশেষে চা বিক্রি শুরু করেছি।

tags

মন্তব্য

মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন

সব খবর